Sun Mercury Venus Ve Ves
বিশেষ খবর
‘লক্ষী’ থেকে লক্ষীপুর, যার আরেক নাম সয়াল্যান্ড  লক্ষীপুর জেলা পরিষদের উদ্যোগে ৫০ মুক্তিযোদ্ধাকে সংবর্ধনা  ফেনী সেন্ট্রাল হাইস্কুল শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের আন্দোলনের মুখে প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ  আ’লীগ আবারও ভোট চুরির পরিকল্পনা করছে - লক্ষীপুরে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী  শ্রীলঙ্কার অবস্থা দেখে বাংলাদেশে দিবাস্বপ্ন দেখার কোনো কারণ নেই - লক্ষীপুরে মাহবুব উল আলম হানিফ 

বেপরোয়া জাটকা নিধনে মেঘনায় ইলিশের আকাল

আগস্ট থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ৩ মাস মেঘনা নদীতে ইলিশ ধরার ভরা মৌসুম থাকলেও লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে আকাল চলছে। জেলেরা নদীতে যে পরিমাণ ইলিশ পায়, তা তাদের মাছ ধরার খরচও উঠে আসছে না। ক্রমাগত লোকসান দিয়ে ঋণগ্রস্ত বহু জেলে হতাশ হয়ে তাদের জাল নৌকা নিয়ে নদী থেকে নিজ নিজ বাড়িঘরে চলে এসেছে।
জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, মৎস্য অধিদপ্তর ইলিশের স্বভাবিক উৎপাদন বজায় রাখার লক্ষ্যে নভেম্বর হতে জুন পর্যন্ত টানা ৮ মাস মেঘনা নদীতে সরকারি সিদ্ধান্তে জাটকা নিধন প্রতিরোধ কর্মসূচি চালায়। মার্চ-এপ্রিল ২ মাস নদীতে সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকে। প্রধান প্রজনন মৌসুমে ইলিশের নিরাপদ প্রজননের জন্য প্রতিবছর আশ্বিন মাসের ভরা পূর্ণিমার সময় ১১ দিন মেঘনায় সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ রাখা হয়। চলতি বছর তা আরও ৪ দিন বাড়িয়ে ১৫ দিন করে মৎস্য অধিদপ্তর।
সূত্রে আরও জানা যায়, জাটকা ও মা ইলিশ নিধন প্রতিরোধ কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য জাতীয় পর্যায় ছাড়াও সরকারিভাবে জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। প্রশাসনিক কর্মকর্তা, কোস্ট গার্ড, স্থানীয় পুলিশ, র‌্যাব, জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিগণ টাস্ক ফোর্সের সদস্যরা মেঘনা উপকূলীয় লক্ষ্মীপুর জেলা, রায়পুর, লক্ষ্মীপুর সদর, রামগতি ও কমলনগর উপজেলায় ও ইউনিয়ন পর্যায়ে গঠিত টাস্কফোর্স প্রতিরোধ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে আসছে।
জেলা মৎস্যজীবী ফেডারেশনের সভাপতি মোস্তফা বেপারী জানান, গত জাটকা মৌসুম ও প্রজননকালীন সময়ে বেপরোয়াভাবে জাটকা (ছোট ইলিশ) ও ডিমওয়ালা মা ইলিশ নিধনের কারণে ইলিশের এ সংকট। নিষিদ্ধকালীন সময় সরকার প্রশাসনিক কর্মকর্তা, কোস্ট গার্ড, স্থানীয় পুলিশ ও র‌্যাব দিয়ে জাটকা (ছোট ইলিশ) ও ডিমওয়ালা মা ইলিশ নিধন বন্ধ করা যাচ্ছে না।
স্থানীয় লোকজন, জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীর সাথে কথা বলে জানা যায়- কমর্সূচি সফলের জন্য প্রচার প্রচারণায় বজ্র আঁটুনিভাব থাকলেও সার্বক্ষণিক সময় তদারকিতে লোকবল ও যানবাহনের অভাবে তা বাস্তবায়ন অনেকটা দুর্বল অবস্থায় থাকে। প্রতি কেজিতে ১’শ টি ২ হতে ৫ ইঞ্চি পর্যন্ত সাইজের জাটকা বা ছোট ইলিশ থাকে এবং প্রজননকালীন সময় পরিপক্ক একটি ইলিশে ২৩ লক্ষ পর্যন্ত পরিপক্ক ডিম থাকে। জাটকা এবং মা ইলিশের প্রধান প্রজননের গত ২ মৌসুমে এক শ্রেণির অসাধু জেলের হাতে নদীতে বিপুল পরিমাণ জাটকা ও মা ইলিশ ধরা পড়ে। যার সামান্য পরিমাণ টাস্ক ফোর্সের অভিযানে আটক করা গেছে বলে স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ীরা জানান।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আলিকুজ্জামান বলেন, অভিযান পরিচালনার জন্য জেলা মৎস্য বিভাগের নিজস্ব কোনো নৌযান নেই। রায়পুর, লক্ষ্মীপুর সদর ও রামগতি উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তার পদ শূন্য। লোকবল ও যানবাহনের অভাবে প্রতিরোধ কর্মসূচি পালন ব্যাহত হচ্ছে। এ বছরের জানুয়ারি-জুন পর্যন্ত জাটকা রক্ষা কর্মসূচির সময় ৬৪২টি অভিযানে ১৭টন জাটকা আটক, ৫০টি মামলায় ৪৮ জন জেলের কারাদন্ড ও ৯০ লক্ষ মিটার কারেন্ট জাল আটক করা হয়েছে। এবারও ২৫ সেপ্টেম্বর হতে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশের ভরা প্রজনন চলাকালীন সময় মা ইলিশ রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
-তাবারক হোসেন আজাদ