Sun Mercury Venus Ve Ves
বিশেষ খবর
‘লক্ষী’ থেকে লক্ষীপুর, যার আরেক নাম সয়াল্যান্ড  লক্ষীপুর জেলা পরিষদের উদ্যোগে ৫০ মুক্তিযোদ্ধাকে সংবর্ধনা  ফেনী সেন্ট্রাল হাইস্কুল শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের আন্দোলনের মুখে প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ  আ’লীগ আবারও ভোট চুরির পরিকল্পনা করছে - লক্ষীপুরে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী  শ্রীলঙ্কার অবস্থা দেখে বাংলাদেশে দিবাস্বপ্ন দেখার কোনো কারণ নেই - লক্ষীপুরে মাহবুব উল আলম হানিফ 

রামগঞ্জ শিশুপার্ক এখন গো-ছাগলের চারণভূমি

মানুষ চিত্ত বিনোদনশীল। যেকোনো সামাজিক বা ধর্মীয় অনুষ্ঠানে মানুষ একটু বিনোদনের জায়গা খোঁজে। কিন্তু সেটা থেকে বঞ্চিত লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জবাসী। শহরে নেই কোনো বিনোদনের স্থান। পৌর শহরের শিশুদের চিত্ত বিনোদনের জন্য নির্মিত একমাত্র শিশুপার্ক থাকলেও এখন সেটা গো-ছাগলের চারণভূমি ও যুবকদের খেলার মাঠে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে অযত্ন-অবহেলা ও নজরদারির অভাবে এ শিশুপার্কের অবকাঠামো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এবং সন্ধ্যার পর তা চলে যাচ্ছে মাদকসেবীদের দখলে।
জানা যায়, বিগত জোট সরকারের শাসনকালে ১৪ অক্টোবর ২০০৫ সালে তৎকালীন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী জিয়াউল হক জিয়া রামগঞ্জ শিশুপার্কটি উদ্বোধন করেন। সে সময় পার্কের চারদিকে পাকা প্রাচীর নির্মাণ করা হয়। পার্কের ভেতরে অনেকগুলি পাকা বেঞ্চ, শিশুদের খেলার সামগ্রী তৈরি করে দেয়া হয়। সেই সাথে পার্কটিতে বিভিন্ন জাতের ফল-ফুল ও কাঠগাছ লাগানো হয়। ১/১১ এর পট পরিবর্তনের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের শাসনকালে শিশুপার্কটি যথাযথভাবে চালু করার ব্যাপারে কেউ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
বর্তমানে রামগঞ্জ শিশুপার্কটি লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদ নিয়ন্ত্রণ করছে। তাতেও কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। ভবিষ্যতে কোনো ছোঁয়া লাগবে কিনা, এমন প্রশ্ন রয়ে গেছে জনসাধারণের মনে।
সরেজমিনে গিয়ে শিশুপার্কটি ঘুরে দেখা যায়, দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে পার্কের দক্ষিণ ও পশ্চিম দিকের গেট ভেঙ্গে পড়েছে। বেশ কয়েকটি বসার বেঞ্চ ও শিশুদের খেলার সামগ্রী অযতেœ নষ্ট হয়ে গেছে। পার্কে লাগানো লক্ষ লক্ষ টাকা মূল্যের ফুল-ফল ও কাঠ গাছগুলির অস্তিত্ব নেই। স্থানীয় প্রভাবশালী মহল প্রশাসনকে ম্যানেজ করে বিগত কয়েক বছর মাসব্যাপী বৈশাখী মেলা ও বাণিজ্য মেলা বসিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। বর্তমানে পার্কটিতে শিশুদের চিত্তবিনোদনের কোনো সুযোগ-সুবিধা নেই। গড়ে তোলা হয়নি কোনো অবকাঠামো। সুশীল সমাজের অনেকে ক্ষোভের সাথে বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সরকারি উদ্যোগের অভাবে শিশুপার্কটি দীর্ঘদিন ধরে চরম অবহেলায় পড়ে আছে। এটি যেন দেখার কেউ নেই। পার্কটির অবকাঠামো এখন ধ্বংসের পথে। এ পার্কে দিনের বেলায় যুবকেরা খেলার মাঠ আর রাখালের গরু ছাগলের চারণভূমি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। সন্ধ্যার পর মাদকসেবী, পতিতা ও বখাটেদের আড্ডা জমে পার্কটিতে।
উপজেলার মাছিমনগর থেকে ঘুরতে আসা আইনুল আহম্মেদ জানান, একটু অবসর পেলে পরিবার নিয়ে ঘুরতে বের হবো এরকম কোনো জায়গা নেই। উপজেলার একমাত্র বিনোদনের জায়গা এই শিশুপার্ক। এখানেও দেখি অযতœ-অবহেলায় সব নষ্ট হয়ে গেছে। বাচ্চাদের নিয়ে ঘুরতে এসে দেখি এ যেন গো-ছাগলের চারণভূমি!
পার্কে চটপটি বিক্রি করতে আসা বাবুল নামের এক যুবক জানায়, আগে আমরা প্রতিদিন বাইরে চটপটি বিক্রি করতাম ৫-৮ হাজার টাকা। এখন পার্কটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় কোনো দর্শনার্থী আসে না। তাই আমরা বিক্রি করতে পারছি না। এখন প্রত্যেকদিন ৪-৫শ’ টাকা বিক্রি করি।
শিশু ফাহিম বলে, আমাদের খেলার জন্য সকল খেলনা নষ্ট হয়ে গেছে। পার্কে আসলে গো- ছাগলে আমাদেরকে ভয় দেখায়। তাদের ভয়ে আমরা একটু খেলতে পারছি না।
এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে শিশুদের একমাত্র বিনোদনের স্থান করে দিবে, এমনই প্রত্যাশা করছে অভিবাবক ও সুশীল সমাজ।