Sun Mercury Venus Ve Ves
বিশেষ খবর
‘লক্ষী’ থেকে লক্ষীপুর, যার আরেক নাম সয়াল্যান্ড  লক্ষীপুর জেলা পরিষদের উদ্যোগে ৫০ মুক্তিযোদ্ধাকে সংবর্ধনা  ফেনী সেন্ট্রাল হাইস্কুল শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের আন্দোলনের মুখে প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ  আ’লীগ আবারও ভোট চুরির পরিকল্পনা করছে - লক্ষীপুরে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী  শ্রীলঙ্কার অবস্থা দেখে বাংলাদেশে দিবাস্বপ্ন দেখার কোনো কারণ নেই - লক্ষীপুরে মাহবুব উল আলম হানিফ 

সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি রামগঞ্জে দ্রব্যমূল্য লাগামহীন

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলায় দীর্ঘদিনযাবৎ বাজার মনিটরিং না থাকায় নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম লাগামহীনভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।এতে ক্রেতারা বাজারে গিয়ে প্রতিদিন নানা ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। আর স্বল্প আয়ের লোকজন তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য খুচরা ব্যবসায়ীরা দায়ী করছে পাইকারি ব্যবসায়ীদেরকে। অভিযোগ রয়েছে, উপজেলার বৃহত্তম সোনাপুর বাজারের পাইকারি মুদি ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য অতিরিক্ত গুদামজাত করার মাধ্যমে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে নিজেদের ইচ্ছামতো দাম বৃদ্ধি করছে।
বিভিন্ন বাজারের ব্যবসায়ীদের সাথে আলোচনা করে জানা যায়, সোনাপুর বাজারের শাহাদাৎ মিয়া, বলরাম বণিক, শ্রীনাথ বণিক, আনা মিয়া পাটোয়ারী, খালেক মাস্টারসহ ৮/১০ জন ব্যবসায়ী রামগঞ্জ উপজেলার মুদি ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। এ সমস্ত ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে সরকারিভাবে গুদামজাত করার নিয়মনীতি না মেনে অতিরিক্ত গুদামজাতের মাধ্যমে সংকট সৃষ্টি করে দাম বৃদ্ধি করে দেয়। এদিকে উপজেলার ছোট-বড় ৪০টি বাজারের খুচরা মুদি ব্যবসায়ীরা স্বল্পপুঁজি ও বাকিতে মালামাল ক্রয় করে ওই সমস্ত পাইকারি ব্যবসায়ীদের নিকট দায়বদ্ধের কারণে চাঁদপুর অথবা চৌমুহনীসহ দেশের বড় বড় পাইকারি বাজারে মোকাম করতে না পারায় বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত দামে ক্রয় করে ভোক্তাদের নিকট অতিরিক্ত দামে বিক্রি করছে। অতিরিক্ত গুদামজাত করার শীর্ষে রয়েছে শাহাদাৎ ব্রাদার্স। তাদের সোনাপুর চৌরাস্তা সংলগ্ন সংরক্ষিত এলাকায় ৭/৮টি গুদামে রয়েছে। এভাবে প্রতিটি ব্যবসায়ীর একাধিক সংরক্ষিত গুদাম রয়েছে। সরেজমিনে বাজার ঘুরে দেখা যায়, মোটা চাল ৩৮ থেকে ৪০ টাকা, চিকন চাল শ্রেণিভেদে ৬০ থেকে ১০০ টাকা, মুশুরি ডাল ১১০ থেকে ১৩০ টাকা, পেঁয়াজ ২২ থেকে ২৫ টাকা, রসুন ১৮০ টাকা, আলু ১০-১৫ টাকা, আটা ২৫-৩০ টাকা, পামওয়েল ১০০ টাকা, সয়াবিন ১২০-১৩০ টাকায় বিক্রি করছে। খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, পার্শ্ববর্তী উপজেলার বাজারগুলিতে এ সমস্ত পণ্যগুলি ৫ থেকে ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে। বাজারের খুচরা মুদি ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম জানান আমরা স্বল্প পুঁজির ব্যবসায়ী, তাই সোনাপুর বাজার থেকে বাকি-নগদে মালামাল ক্রয় করে ২/৩ টাকা লাভে বিক্রি করতে হয়। সোনাপুর বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে মালামাল বেশি দামে বৃদ্ধি করে এটা সবাই জানে, কিন্তু প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে কারো কিছু করার নাই।
রামগঞ্জ খাদ্য গুদাম এর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রবীর কুমার মন্ডল জানান, বাংলাদেশের সকল অঞ্চলের চাইতে রামগঞ্জে সবসময় দ্রব্যমূল্য দাম বেশি থাকে, জেলা পর্যায়ে যে বাজারে মনিটরিং কমিটি আছে, তারা বিশেষ কোনো কারণ ছাড়া উপজেলায় আসছে না। তাই ব্যবসায়ীরা নিজেদের ইচ্ছামতো দাম নির্ধারণ করে বিক্রি করছে। ক্রেতাদেরও বাধ্য হয়ে কিনতে হচ্ছে।
রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবু ইউছুফ জানান, সরকারি নিয়ম-কানুন উপেক্ষা করে অতিরিক্ত মজুত এর মাধ্যমে বাজারে সংকট সৃষ্টি করে দাম বিক্রি করা আইনানুগভাবে অপরাধ। খুব শীঘ্রই অভিযানের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
স্থানীয় সংসদ সদস্য লায়ন এম এ আউয়াল জানান, বর্তমানে বাংলাদেশে কোনো পণ্যেরই সংকট নাই। ছোট-বড় সকল বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণ পণ্য রয়েছে; দামও কম। যদি রামগঞ্জে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দাম বাড়িয়ে বিক্রি করে, তাহলে আমি প্রশাসনের মাধ্যমে বাজার মনিটরিং টিম গঠন করে ব্যবস্থা গ্রহণ করব। -জাহাঙ্গীর লিটন