শিক্ষা ও গবেষণায় যশস্বী ব্যক্তিত্ব, খ্যাতিমান শিক্ষাবিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য অনুষদের নিউমারি প্রফেসর
মরহুম ড. মোহাম্মদ হাবিবউল্লাহ
শিক্ষা ও গবেষণায় খ্যাতিমান ব্যক্তিত্ব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য অনুষদের সাবেক ডিন প্রফেসর ড. এম হাবিবউল্লাহ। তিনি ছিলেন সদালাপী, হাস্যময়, কৌতুকপ্রিয় মানুষ; সবার কাছে সমাদৃত কৃর্তিমান পুরুষ। হতাশা, মলিনতা তাঁকে স্পর্শ করতে পারেনি। মহান এ ব্যক্তিত্ব ১৯৩২ সালে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার কাফিলাতলী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। মেধা ও মননে অনন্য মরহুম ড. হাবিবউল্লাহ ১৯৫৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তদানীন্তন বাণিজ্য বিভাগে লেকচারার হিসেবে যোগ দেন।
গবেষণার স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি কমনওয়েলথ স্কলারশিপ লাভ করেন এবং কানাডার স্বনামধন্য পশ্চিম ওন্টারিও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি সেখানে ডিনের সম্মান তালিকায় স্থান পান। দেশে ফিরে তিনি আমাদের পাটশিল্পে গণতন্ত্র সম্মত তদারকি ব্যবস্থার প্রয়োগের উপর কাজ করে পিএইচডি অর্জন করেন। ১৯৭৪ সালে ড. হাবিবউল্লাহ প্রফেসর নিযুক্ত হন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা ব্যুরো তাঁর রচিত ৮টি রিসার্চ মনোগ্রাফ প্রকাশ করে, যা দেশে-বিদেশে সুধী-সমাজের নিকট ব্যাপক সমাদৃত হয়। এছাড়া অনুষদের জুনিয়র শিক্ষকগণকে গবেষণা কাজে উৎসাহ দিতে টিম গঠন করে টিমের নেতা হিসেবে বেশ কয়েকটি গবেষণা প্রকল্প সমাপ্ত করেন। তিনি দেশে-বিদেশে জার্নাল ও ম্যাগাজিনে প্রায় ৯০টি প্রবন্ধ প্রকাশ করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ক্ষেত্রে মরহুম ড. হাবিবউল্লাহ বিশেষ অবদান রেখেছেন। তিনি হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান, বাণিজ্য অনুষদের ডিন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট ও ফিন্যান্স কমিটির সদস্য এবং ব্যুরো অব বিজনেস রিসার্চের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। মরহুম ড. হাবিবউল্লাহ ১৯৭৩-৭৪ সালে জাতীয় শিক্ষা কমিশনের সদস্য, সরকারের টি ইনকোয়ারী কমিটির সদস্য, সাধারণ বীমা কর্পোরেশন পরিচালনা পর্ষদের ডাইরেক্টর, ইন্স্যুরেন্স প্রাইভেটাইজেশন কমিটির চেয়ারম্যান এবং উত্তরা ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ ব্যাংক পরিচালনা বোর্ডের ডাইরেক্টর এবং জীবন বীমা কর্পোরেশনের পরিচালনা বোর্ডের ডাইরেক্টর, সরকারের দ্বি-বার্ষিকী পরিকল্পনা প্যানেলের সদস্য, বাংলাদেশ সমাজ বিজ্ঞানী সমিতির সিনিয়র ভাইস-প্রেসিডেন্ট এবং বাংলাদেশ প্রবীণ হিতৈষী সমিতির ইসি সদস্য হিসেবে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলা একাডেমী এবং বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমিতির আজীবন সদস্য ছিলেন।
মরহুম ড. হাবিবউল্লাহ সাবেক ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান সাহিত্য পুরস্কার, করাচির ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনিং সমিতি পুরস্কার, বিচারপতি ইব্রাহিম স্মারক স্বর্ণপদক, আব্দুর রব চৌধুরী স্বর্ণপদকসহ বেশ কয়েকটি পুরস্কারলাভ করেন।